সহিংসতা বন্ধ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার আহবান
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রতিক্ষণ ডটকম:
বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক সহিংসতা বন্ধ করে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রতি আহবান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ ১০ দেশের কূটনীতিকরা।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দুই ঘণ্টার বৈঠক শেষে তারা এ আহবান জানান।
বৈঠক শেষে গুলশান কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের ঢাকাস্থ অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রদূত গ্রেগ উইলকক বলেন, আমরা বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার, চার্জ দ্য আফেয়ার্সগণ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছি।
বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করার জন্যই আমাদের এ বৈঠক। গত রবিবার সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে আমরা যে বৈঠক করেছি সে ধারবাহিকতায় এ বৈঠক।
তিনি বলেন, আমরা দুই পক্ষকে চলমান রাজনৈতিক সহিংসতা, অস্থিরতা বন্ধ করে শান্তি প্রতিষ্ঠার আহবান পুনর্ব্যক্ত করেছি। পারস্পরিক বিশ্বাস পুনর্স্থাপন ও দ্বন্দ্ব নিরসন করে আস্থা নিজেদের মধ্যে আস্থা স্থাপনের আহবান জানিয়েছে।
আমরা, বাংলাদেশের মানুষের নিরাপত্তা, মানবাধিকার ও স্থিতিশীল গণতন্ত্রের জন্য সকল পক্ষকে আবার আহবান জানাচ্ছি।
তিনি এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ধন্যবাদ জানান।
এর আগে, খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট, অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রদূত গ্রেগ উইলকক, ইইউ রাষ্ট্রদূত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ৮টি দেশের কূটনীতিকরা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে তারা কূটনৈতিক কোরের দ-৬৫-৫১১ নম্বরের একটি সাদা রংয়ের মাইক্রোবাসে করে তারা সবাই খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। গাড়িটির সামনে-পেছনে ছিল পুলিশের নিরাপত্তা। রাত পৌনে নয়টার দিকে তারা কার্যালয় ছেড়ে যান।
ইইউ-ভুক্ত দেশগুলোর প্রতিনিধিদের মধ্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইতালী, নেদারল্যান্ডস, জার্মানী, সুইডেন, স্পেন ও ডেনমার্কের কূটনীতিকেরা রয়েছেন বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশের আসার পর খালেদা জিয়ার সঙ্গে এটাই বার্নিকাটের প্রথম সাক্ষাৎ।
গত ৩ জানুয়ারি থেকে গুলশান কার্যালয়ে রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
এরই মধ্যে ২৫ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আদালতে হাজির না হওয়ায় খালেদা জিয়ার জামিন বাতিল করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
ইতোমধ্যে গত রোববার মহানগর মূখ্য হাকিমের আদালত খালেদা জিয়ার কার্যালয় তল্লারী নির্দেশ দিয়েছে।
এদিকে বুধবার খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের বিচারাধীন দুটি দুর্নীতির মামলার তারিখ রয়েছে। বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে অনুষ্ঠিত বিশেষ আদালতে হাজিরার তারিখ রয়েছে খালেদা জিয়ার।
অন্যদিকে, মঙ্গলবার দুপুরে খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও আদালতের জামিন পাওয়া সাপেক্ষে কার্যালয়ে ফিরে আসার আশ্বাস পেলে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আত্মসমর্পণ করবেন।’
এ অবস্থায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আকস্মিকভাবেই বেগম খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে গেলেন কুটনীতিকরা।
প্রতিক্ষণ /এডি/আরিফ